রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতে বিএনপির ২৭ রূপরেখা

বিএনপির ২৭ রূপরেখা

Share on facebook
Share on twitter
Share on whatsapp
Share on print

রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতে ২৭টি রূপরেখা ঘোষণা করেছে বিএনপি। ২৭ রূপরেখার মধ্যে সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তন, পরপর দুই টার্মের অতিরিক্ত কেউ প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন না করা, শিক্ষিত বেকারদের বেকার ভাতা প্রদান, সরকারি চাকুরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বৃদ্ধি বিবেচনার আশ্বাস দেয়া হয়।

সম্প্রতি ঢাকার গুলশানের হোটেল ওয়েস্টিনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ ২৭ রূপরেখার বিস্তারিত তুলে ধরেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

উল্লেখ্য অধিকাংশ রুপরেখাই বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন দল তাদের রাজনৈতিক এজেন্ডা হিসেবে এগুলো অনেক আগে থেকেই প্রকাশ ও প্রচারণা চালিয়ে এসেছে। বিএনপির এই রূপরেখায় সেই দলগুলোর এজেন্ডাকে নিজেদের করে নেয়ার কোন স্বীকৃতি ছিল না এই সংবাদ সম্মেলনে। এমনকি কিছু কিছু বিএনপির সংস্কারপন্থীদেরও কর্মসূচি ছিল বলে জানা গেছে।

২৭ রূপরেখা হলো-
১. একটি “সংবিধান সংস্কার কমিশন” গঠন করে বর্তমান অবৈধ আওয়ামী লীগ সরকার কর্তৃক গৃহীত সকল অযৌক্তিক, বিতর্কিত ও অগণতান্ত্রিক সাংবিধানিক সংশোধনী ও পরিবর্তনসমূহ রহিত/সংশোধন করা হবে।
২. প্রতিহিংসা ও প্রতিশোধের রাজনীতির বিপরীতে বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক “Rainbow-Nation” প্রতিষ্ঠা করা হবে। এ জন্য একটি “National Reconciliation Commission” গঠন করা হবে।

৩. একটি “নির্বাচনকালীন দলনিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার” ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হবে।

৮. রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিসভার নির্বাহী ক্ষমতায় ভারসাম্য আনয়ন করা হবে।
৫. পরপর দুই টার্মের অতিরিক্ত কেউ রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না।
৬. বিশেষজ্ঞ জ্ঞানের সমন্বয়ে রাষ্ট্র পরিচালনার লক্ষ্যে জাতীয় সংসদে “উচ্চ কক্ষ বিশিষ্ট আইনসভা” (Upper House of the Legislature) প্রবর্তন করা হবে।
৭.সংসদ সদস্যদের স্বাধীনভাবে মতামত প্রদানের সুযোগ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ সংশোধন করার বিষয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা হবে।

৮. বর্তমান “প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন, ২০২২” সংশোধন করা হবে।

৯. সকল রাষ্ট্রীয়, সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান পুনর্গঠন করা হবে। শুনানির মাধ্যমে সংসদীয় কমিটির ভেটিং সাপেক্ষে এই সকল প্রতিষ্ঠানের সাংবিধানিক ও গুরুত্বপূর্ণ পদসমূহে নিয়োগ প্রদান করা হবে।

১০. বিচার বিভাগের কার্যকর স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হবে। বর্তমান বিচারব্যবস্থার সংস্কারের জন্য একটি “জুডিশিয়াল কমিশন” গঠন করা হবে।

১১. একটি “প্রশাসনিক সংস্কার কমিশন” গঠন করে প্রশাসন পুনঃগঠন করা হবে।

১২. মিডিয়ার সার্বিক সংস্কারের লক্ষ্যে একটি “মিডিয়া কমিশন” গঠন করা হবে।

১৩. দুর্নীতির ক্ষেত্রে কোন আপোষ করা হবে না। অর্থ-পাচার ও দুর্নীতির অনুসন্ধান করে একটি শ্বেতপত্র প্রকাশ করা হবে। সংবিধান অনুযায়ী “ন্যায়পাল (Ombudsman)” নিয়োগ করা হবে।

১৪. সর্বস্তরে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা হবে।
১৫. বিশেষজ্ঞ সমন্বয়ে একটি “অর্থনৈতিক সংস্কার কমিশন” গঠন করা হবে।

১৬. “ধর্ম যার যার, রাষ্ট্র সবার” এই মূলনীতির ভিত্তিতে প্রত্যেক ধর্মাবলম্বী নিজ নিজ ধর্ম পালনের পূর্ণ অধিকার ভোগ করবেন।

১৭.মুদ্রাস্ফীতির আলোকে শ্রমজীবী মানুষের ন্যায্য মজুরি নিশ্চিত করা হবে।

১৮. বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ খাতে দায়মুক্তি আইনসহ সকল কালাকানুন বাতিল করা হবে।

১৯. বৈদেশিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থকে সর্বোচ্চ প্রাধান্য দেয়া হবে। বাংলাদেশ ভূ-খণ্ডের মধ্যে কোনো প্রকার সন্ত্রাসী তৎপরতা বরদাশত করা হবে না এবং কোন সন্ত্রাসবাদী তৎপরতা আশ্রয়-প্রশ্রয় পাবে না। সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গিবাদ ও উগ্রবাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সন্ত্রাসবিরোধী আইনের অপব্যবহারের মাধ্যমে সন্ত্রাসবাদকে রাজনৈতিক ঢাল বা হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে এবং সন্ত্রাসবাদের তকমা লাগিয়ে ভিন্নমতের বিরোধী শক্তি এবং রাজনৈতিক বিরোধী দল দমনের অপতৎপরতা বন্ধ করা হলে প্রকৃত সন্ত্রাসীদের চিহ্নিত করে এবং আইনের আওতায় এনে শাস্তি প্রদান করা সম্ভব হবে।

২০. দেশের সার্বভৌমত্ব সুরক্ষায় প্রতিরক্ষা বাহিনীকে সর্বোচ্চ দেশপ্রেমের মন্ত্রে উজ্জীবিত করে গড়ে তোলা হবে।

২১. ক্ষমতার ব্যাপক বিকেন্দ্রীকরণের লক্ষ্যে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোকে অধিকতর স্বাধীন, শক্তিশালী ও ক্ষমতাবান করা হবে।

২২. রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের একটি তালিকা প্রণয়ন করা হবে এবং তাঁদের যথাযথ রাষ্ট্রীয় মর্যাদা ও স্বীকৃতি প্রদান করা হবে।

২৩. যুবসমাজের ভিশন, চিন্তা ও আকাক্সক্ষাকে ধারণ করে আধুনিক ও যুগোপযোগী যুব-উন্নয়ন নীতিমালা প্রণয়ন করা হবে। এক বছরব্যাপী অথবা কর্মসংস্থান না হওয়া পর্যন্ত, যেটাই আগে হবে, শিক্ষিত বেকারদের বেকার ভাতা প্রদান করা হবে। আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী সরকারি চাকুরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বৃদ্ধি বিবেচনা করা হবে।

২৪. নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সুনির্দিষ্ট কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে। জাতীয় সংসদে মনোনয়নের ক্ষেত্রে নীতিগতভাবে নারীদের প্রাধান্য দেয়া হবে।

২৫. চাহিদা-ভিত্তিক (Need-based) ও জ্ঞানভিত্তিক (Knowledge-based) শিক্ষাকে প্রাধান্য দেয়া হবে।

২৬. “সবার জন্য স্বাস্থ্য” এই নীতির ভিত্তিতে যুক্তরাজ্যের ‘NHS’ এর আদলে সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা প্রবর্তন করা হবে।

২৭. কৃষিপণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা হবে।

ফেসবুকে আমরা

আরো পড়ুন

দেশ ও দলের স্বার্থে পরিবর্তনের বাংলাদেশ গড়তে চাই-মনোয়ার সরকার

কুমিল্লা-২ আসনে (হোমনা-তিতাস) বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী যুক্তরাজ্য জিয়া পরিষদের ভাইস প্রেসিডেন্ট মনোয়ার সরকার কুমিল্লায় কর্মরত সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন। মঙ্গলবার...

Read more
নাঙ্গলকোটের সাবেক ইউপি সদস্য আলাউদ্দিন হত্যার বিচারের দাবিতে মানববন্ধন

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে সাবেক ইউপি সদস্য আলাউদ্দিনকে প্রকাশ্যে তুলে নিয়ে গুলি করে হত্যার ঘটনার বিচার দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন এলাকাবাসী।...

Read more
আবৃত্তি সংসদ কুমিল্লার কার্যকরী কমিটি পুনর্গঠন

কুমিল্লায় আবৃত্তিচর্চার অগ্রদূত সংগঠন আবৃত্তি সংসদ কুমিল্লার কার্যকরী কমিটি পুনর্গঠন করা হয়েছে। গতকাল সন্ধ্যায় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ইনস্টিটিউট...

Read more
কুমিল্লায় বিএনপি নেতা বিপুকে হত্যাকাণ্ডে জড়ানোর অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন

কুমিল্লা মহানগর বিএনপির ৫নং ওয়ার্ড সভাপতি ইমতিয়াজ সরকার নিপু অভিযোগ করেছেন, রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে তার ছোট ভাই ও বিএনপি নেতা...

Read more
৪ আগস্ট কুমিল্লায় বিজয় ছিনিয়ে এনেছিলাম-উদবাতুল বারী আবু

দেলোয়ার হোসাইন আকাইদ// “৫ আগস্ট বাংলাদেশ স্বাধীন হলেও ৪ আগস্ট কুমিল্লায় আমরা বিজয় ছিনিয়ে এনেছিলাম”—বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অসহযোগ কর্মসূচিতে নেতৃত্বদানকারী...

Read more
Scroll to Top