বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ও সাবেক এমপি ডা: সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো: তাহের বলেছেন, জামায়াতকে নি:শেষ করা যাবেনা ইনশাআল্লাহ। বরং জামায়াতকে শেষ করতে গিয়ে ষড়যন্ত্রকারীরা নিজেরা শেষ হয়ে গেছে। জামায়াত গরীবদের দ্বারা ধনী দল।জামায়াতের উত্থান দমাতে গিয়ে অনেকে সুর পাল্টাচ্ছে। কিছু নেতা ফ্যাসিবাদকে সঙ্গে নিয়ে নির্বাচনে যেতে চায়। জামায়াতের উত্থানকে ডাইভেট করতে চায় তারা। জনগণ পারে জামায়াতের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র রুখে দিতে।জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। স্বৈরাচার, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, দুর্নীতিবাজ, টাকা পাচারকারিদেরকে প্রত্যাক্ষাণ করতে জনগণকে জাগিয়ে তুলতে হবে। শহীদের রক্তস্নাত বাংলাদেশকে দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার করতে হবে। ইসলামী বাংলাদেশ। দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে জনগণকে সজাগ করতে হবে।
তিনি ১ নভেম্বর শুক্রবার বিকেলে কুমিল্লা জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে জামায়াতে ইসলামী কুমিল্লা মহানগর আমির’র শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপরিউক্ত কথা বলেন।
নব নির্বাচিত কুমিল্লা মহানগরী আমির কাজী দ্বীন মোহাম্মদের সভাপতিত্বে শপথ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে শপথবাক্য পাঠ করান কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মাসুম। বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এএইচএম আবদুল হালিম।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডা: তাহের আরো বলেন, আমরা নতুন স্বাধীনতা পেয়েছি কিন্তু ষড়যন্ত্র থেকে মুক্ত হইনি। প্রথমদিন থেকেই ভারত এই সরকারকে ফেল করাতে এবং আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আনতে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীর বিরুদ্ধেও ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। অতীতের ন্যায় ভবিষ্যতেও জামায়াতকে কেউ ঠেকাতে পারবে না ইনশাআল্লাহ। যারা জালেম, লুটেরা, ক্ষমতার অপব্যবহারকারী, যারা অবৈধ শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য দায়ী তাদেরকে কঠিন বিচারের আওতায় আনতে হবে। আওয়ামী লীগকে সামাজিকভাবেও প্রতিহত করতে হবে। আমাদেরকে আরো একটি সংগ্রাম করতে হবে। সেটি হলো এদেশ থেকে সকল প্রকার জুলুম, সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজমুক্ত করা।
জামায়াতের এ নেতা আরো বলেন, তিন মাসে দৃশ্যত তেমন কিছু দেখাতে পায়নি জনগণ। তবে স্বল্প সময়ে ভালো কিছু দেখানোও সম্ভবও নয়।
অনুষ্ঠানে পবিত্র কোরআন মজীদ থেকে দারস পেশ জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরার সদস্য ও ফেনী জেলার সাবেক আমীর অধ্যাপক লিয়াকত আলী ভূঁইয়া। অনুষ্ঠান পরিচালনা মহানগর জামায়াতের সেক্রেটারি একেএম এমদাদুল হক মামুন।
জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিম মাসুম বলেন, নবী রাসূলদের থেকেও আল্লাহ শপথ নিয়েছেন বা বায়াত গ্রহণ করিয়েছেন। নবীগণ কিতাব ও হিকতম নিয়ে এসেছেন। নবীদের উত্তরসূরী হিসেবে আমাদের দায়িত্বশীলগণ অঙ্গিকারাবদ্ধ হবেন। সে সুন্নাহ হিসেবে আমাদের দায়িত্বশীলগণেরও শপথ পাঠ করানো হয়।
বিপ্লবকে কাজে লাগিয়ে ইসলামী বিপ্লবে মনোযোগ দিতে হবে। ইসলাম ছাড়া সুশাসন সম্ভব নয়। ইসলাম সব ধর্মের জন্য নিরাপদ আশ্রয়স্থল। ইসলামী শাসন ব্যবস্থা মানুষদের নিরাপত্তা দিতে পারে। দুর্নীতিরমূলতপাটনে ইসলামী শাসন ব্যবস্থার বিকল্প নেই। দেশের মানুষ তিনটি রাজনৈতিক দলের শাসন দেখেছে কিন্তু শান্তি পায়নি তাদের শাসনে। দেশের মানুষ জামায়াতকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় দেখতে চায় এবং ইসলামী শাসন ব্যবস্থার প্রকৃত কার্যকারিতা দেখতে চায়।
তিনি আরো বলেন, মানের জনশক্তি তৈরী করতে হবে। ঘরে ঘরে জনগণকে সাথে নিয়ে জামায়াতের কমিটি গঠন করে সংগঠনকে শক্তিশালী করতে হবে। যোগ্য ও দক্ষ লোকদেরকে এগিয়ে নিয়ে আসতে হবে। ইসলাম ও অধুনিক জ্ঞান অর্জন করতে হবে। জামায়াত কর্মীদেরকে বহুবিধ প্রতিভার অধিকারী হতে হবে।
জামায়াতের আরেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এএইচএম আব্দুল হালাম বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বলেন,আল্লাহর অশেষ মেহেরবাণি যে তিনি স্বৈরাচারীর হাত থেকে জাতিকে হেফাজত করেছেন। ১১ জন শীর্ষ নেতাকে হত্যা করা হয়েছে। পাঁচশতাধিক জামায়াত নেতা-কর্মীকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। বিনা অপরাধে হাজার হাজার মানুষকে পঙ্গু করা হয়েছে। অনেকে চিরতরে অন্ধ হয়ে গেছে। জালিমের হাত থেকে হাজার হাজার শহীদের জীবনের বিনিময়ে দেশের মানুষ মুক্তি পেয়েছে। বর্তমান পরিবেশে মানুষদেরকে দ্বীনের পথে আনার সুযোগ তৈরী হয়েছে। এই সুযোগের সঠিক ও সৎ ব্যবহার করতে হবে। দাওয়াতী কাজ ব্যক্তিগত ভাবে ও সামষ্ঠিক ভাবে বাড়াতে হবে। আমাদেরকে রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে নয় একজন দায়ী ইলাল্লাহ হিসেবে যেন দেখতে পায় জনগণ।