
কুমিল্লার সংগীতাঙ্গনে এক চেনা নাম আলো সাহা আলপনা। দীর্ঘদিন ধরে সুরেলা কণ্ঠে শ্রোতাদের মুগ্ধ করে আসা এই শিল্পী এবার হাজির হলেন তাঁর নবম মৌলিক গান ‘মন তবু তোমাকে চায়’ নিয়ে। গানটির প্রকাশনা অনুষ্ঠান রূপ নিয়েছিল এক বর্ণাঢ্য উৎসবে।
শনিবার রাতে নগরীর ঝাউতলার এক অভিজাত হোটেলের হলরুম ভরে ওঠে আলো-ঝলমলে সাজে। অতিথি, শিল্পী, শুভানুধ্যায়ী—সবাই মিলিত হয়ে গানের মোড়ক উন্মোচনকে পরিণত করেন মিলনমেলায়। কেক কাটা, প্রদীপ প্রজ্বালন, নৃত্য পরিবেশনা ও শিল্পীদের শুভেচ্ছা বার্তায় অনুষ্ঠানটি হয়ে ওঠে বর্ণিল।
‘মন তবু তোমাকে চায়’ শুধু একটি গান নয়, বরং এক সৃজনশীল যাত্রা। গানটির কথা লিখেছেন গীতিকার এস দাস, সুর করেছেন এস দাস ও রাজেশ মজুমদার, আর সঙ্গীতায়োজন করেছেন ভারতের প্রতীক প্রধান। গানটি রেকর্ড করা হয়েছে কলকাতার দ্য সাউন্ড স্টুডিও ইন্ডিয়া-তে।
ভিডিও শুটিং হয়েছে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের নীল জলরাশি আর হিমছড়ির পাহাড়ি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে। সাফায়েত বাঁধনের নির্দেশনায় এবং নূর জাহান ইসলামের সহ-পরিচালনায় ভিডিওটি নির্মিত হয়, যা দর্শকদের সামনে গানটির আবহকে ভিজ্যুয়াল রূপ দেবে।
প্রকাশনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কুমিল্লার হৃদ্রোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক তৃপ্তীশ চন্দ্র ঘোষ, ফরিদ গ্রুপের পরিচালক দেলোয়ার হোসেন (মানিক), হালিমা গ্রুপের চেয়ারম্যান আবুল কালাম হাসান (টগর), কুমিল্লা ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আহমেদ শোয়েব, কুমিল্লা টাউন হলের সদস্য সচিব সাজ্জাদুল কবীরসহ বিভিন্ন অঙ্গনের বিশিষ্টজন।
অধ্যাপক তৃপ্তীশ চন্দ্র ঘোষ বলেন, “আলো সাহা আলপনার কণ্ঠে গান শুনে আমি সবসময় মুগ্ধ হই। তাঁর উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করছি।”
ব্যবসায়ী দেলোয়ার হোসেন (মানিক) মন্তব্য করেন, “আমার বিশ্বাস, কুমিল্লা থেকেই শুরু হলেও আলো সাহা আলপনা একদিন জাতীয় পর্যায়ে অনেক দূর এগিয়ে যাবে।”
আবুল কালাম হাসান (টগর) বলেন, “আলোকে আমি ছোটবেলা থেকেই জানি। তাঁর সুরেলা কণ্ঠে গান অসাধারণ। আমি বিশ্বাস করি, তিনি একদিন দেশের সেরা গায়িকাদের একজন হবেন।”
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন আবৃত্তিকার ও উপস্থাপক সুলতানা পারভীন (দীপালী)। প্রদীপ প্রজ্বালনের পর পরিবেশিত হয় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গান ‘অঞ্জলি লহ মোর গান’, যার সঙ্গে নৃত্য পরিবেশন করেন অহনা দেবনাথসহ আরও কয়েকজন শিল্পী।
পরবর্তীতে নিজেই গাইলেন আলো সাহা আলপনা। নতুন গান ‘মন তবু তোমাকে চায়’ পরিবেশন করে তিনি মুহূর্তেই মুগ্ধ করলেন উপস্থিত শ্রোতাদের। নৃত্য পরিবেশনায়ও অংশ নেন এই শিল্পী।
নিজের গান নিয়ে অনুভূতি জানাতে গিয়ে আলো সাহা আলপনা বলেন, “এটি আমার প্রথম মৌলিক গান নয়, তবে এই গানের জন্য আমাকে অনেক পরিশ্রম করতে হয়েছে। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর গানটি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করতে পারায় আমি সত্যিই আনন্দিত।”
আলো সাহা আলপনা বর্তমানে লংকাবাংলা ফাইন্যান্সে কর্মরত। তাঁর সহকর্মীরাও অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে গানের প্রশংসা করেন।
গানটির পৃষ্ঠপোষকতায় ছিলেন কুমিল্লার ফরিদ গ্রুপ, হালিমা গ্রুপসহ আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠান।
আয়োজকদের বিশ্বাস, আলপনার এই কাজ কুমিল্লার সাংস্কৃতিক অঙ্গনের জন্য গর্বের বিষয় হয়ে থাকবে।
প্রকাশনা শেষে অতিথি ও শুভানুধ্যায়ীরা একসঙ্গে মত দেন—আলো সাহা আলপনার কণ্ঠস্বর ও সঙ্গীতচর্চা আগামী দিনে তাঁকে জাতীয় পর্যায়ে নিয়ে যাবে, যেখানে কুমিল্লার পরিচিত এই শিল্পী হয়ে উঠবেন বাংলাদেশের গর্ব।