
নিয়মিত অভিযান, মাদকদ্রব্য উদ্ধার, আসামী গ্রেপ্তার ও মামলা দায়েরসহ শুধু দাপ্তরিক কাজেই সীমাবদ্ধ না থেকে মাদকের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন ও গণসচেতনতা বাড়াতে নানা কর্মসূচি ও প্রচারণা কার্যক্রম গ্রহণ করে প্রশংসায় ভাসছেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর কুমিল্লার উপ-পরিচালক চৌধুরী ইমরুল হাসান।
জানা যায়, স্কুল-কলেজে মাদকবিরোধী প্রচার-প্রচারণায় কুইজ প্রতিযোগিতা, বিতর্ক প্রতিযোগিতা, চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা, সভা-সেমিনার, সাইকেল র্যালী, সাইক্লিং, বিভিন্ন ধরণের খেলাধুলা, মাদকের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারবিরোধী র্যালী, মাদক বিরোধী শ্লোগান সম্বলিত শিক্ষা উপকরণ বিতরণ, মাদকবিরোধী কাজে অবদানকারী ব্যাক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা প্রদান, বিভিন্ন স্থানে মাদকবিরোধী বিলবোর্ড স্থাপন, পথসভা ও উঠান বৈঠকসহ মাদকবিরোধী নানাবিধ কাজ নিয়মিত করে যাচ্ছেন। ফলে মাদকবিরোধী প্রচার প্রচারণা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে এবং সামাজিক সচেতনতা বাড়ছে। অনেক এলাকায় মাদক কারবারীদের বিরুদ্ধে স্থানীয়ভাবে প্রতিরোধ গড়ে উঠেছে।
নিয়মিত অভিযানে চৌধুরী ইমরুল হাসান উপ-পরিচালকের দায়িত্ব পালনের সময় ২০২১ সালের জুন থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত মাদক কারবারীদের বিরুদ্ধ ৭২০৫টি অভিযান পরিচালনা করেন। এসময় নিয়মিত ও মোবাইল কোর্টে মামলা করেন ২১৭৪টি এবং এসব মামলায় আসামী করেন ২৩১৩ জনকে। সম্প্রতি ৫ আগস্ট এর পরে প্রতিকূল পরিবেশে জেলার শীর্ষ তালিকাভুক্ত ৭ জন মাদকের গডফাদার এর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
অনেক মাদকসেবীকে মাদকাসক্তি থেকে সুস্থ করতে মাদকসেবীর পরিবারের সহযোগিতায় ভর্তি করিয়েছেন বিভিন্ন নিরাময় কেন্দ্রে। তাছাড়া জেলার সকল মাদকাসক্তি পুনর্বাসন কেন্দ্রগুলোতে নিয়মিত পরিদর্শন করার পাশাপাশি তদারকি করছেন। মাদকাসক্তি পুনর্বাসন কেন্দ্রের মালিক, পরিচালক ও কাউন্সিলরদের সাথে নিয়মিত মতবিনিময় সভা করে বিভিন্ন দিকনির্দেশনা প্রদান করে আসছেন।
এছাড়া চট্টগ্রাম বিভাগের মধ্যে একমাত্র কুমিল্লা জেলায় বিজ্ঞ আদালতে প্রসিকিউশন শাখার উদ্বোধন এবং পরিবেশবান্ধব মাদক বিনষ্টকরণ চুল্লি স্থাপন করেন। সব মিলিয়ে সীমান্ত ও মাদক কারবারীদের স্বর্গরাজ্য কুমিল্লায় বড় ধরনের হোচট খাচ্ছে মাদকের গড ফাদাররা। মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, কুমিল্লা বাসীর জন্য স্বস্তির নাম হলেও মাদক কারবারীদের কাছে এক আতংকের নাম হয়ে দাঁড়িয়েছে। চৌধরী ইমরুল হাসান চট্রগ্রাম বিভাগের মধ্যে সর্বোচ্চ পরিমাণ আলামত উদ্ধার করায় বিভাগীয় কার্যালয় কর্তৃক সম্মাননা স্মারক পান। এছাড়াও বিজ্ঞ চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক ভালো কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ সম্মাননা স্মারক দেওয়া হয়। সব মিলিয়ে কুমিল্লায় একজন চৌকস, নির্ভীক, নিষ্ঠাবান ও দক্ষ কর্মকর্তা হিসেবে ভালো সুনাম কুঁড়িয়েছেন তিনি। জেলা জুড়ে ভাসছেন প্রশংসায়। ফলে জেলার সকল মাদক কারবারিরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে নেমেছেন মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, কুমিল্লার উপ-পরিচালক চৌধুরী ইমরুল হাসানের বিরুদ্ধে। বিভিন্ন মাধ্যমে করছেন অপপ্রচার। তাকে বদলী করতে সব মাদক কারবারিরা একটি বিশাল ফান্ড তৈরী করেছেন বলে একটি সূত্র থেকে জানা যায়।
ডিডি ইমরুল মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরকে মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছাতে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। দপ্তরের কাজের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার জন্য নিয়মিত সকল অভিযানের ভিডিও, ছবি ও তথ্য জেলার সকল পর্যায়ের সাংবাদিকদের প্রতিনিয়ত দিয়ে যাচ্ছেন। ডিএনসি জেলা কার্যালয়ের কার্যক্রম প্রচারের জন্য ডিডি চৌধুরী ইমরুল হাসান একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ খুলে নিয়মিত মাদক অভিযানের তথ্য দিয়ে সাংবাদিকদের সহযোগিতা করেছেন। যেখানে কুমিল্লা জেলার প্রায় শতাধিক সাংবাদিক যুক্ত রয়েছেন।
সাংবাদিক আলমগীর হোসেন বলেন, বিগত দিনে দপ্তর থাকলেও সীমান্ত সংলগ্ন এ জেলায় মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কার্যক্রম খুব একটা চোখে পড়তো না বললেই চলে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে জেলা শহর, সীমান্ত এলাকা সহ বিভিন্ন উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকায় মাদক কারবারিদের ডেরায় ঝটিকা অভিযান, মোবাইল কোর্ট, টাস্কফোর্সের হানায় মাদক উদ্ধার ও ছোট থেকে বড় মাদক কারবারিদের গ্রেপ্তারের মাধ্যমে বেশ প্রশংসিত হয়েছেন অধিদপ্তরের কুমিল্লার উপ-পরিচালক চৌধুরী ইমরুল হাসান। ২০২১ সালের পহেলা জুনে কুমিল্লায় যোগদানের পর থেকেই জেলা কার্যালয়সহ এর কর্মকান্ডেও ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। জেলার মাদক পাচারকারী, কারবারি ও সেবনকারীদের কাছে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর এখন আতঙ্কের নাম।
কুমিল্লা বেতারের নিয়মিত শিল্পী, আবৃত্তিকার মাহতাব সোহলে বলেন, এক সময় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কোন দৃশ্যমান কাজ আমাদের চোখে পড়তো না। এখন পত্রিকার পাতায় প্রতিদিনই তাদের কর্মকান্ড চোখে পড়ে। এছাড়া মাদক বিরোধী বিভিন্ন সচেতনতামূলক প্রচার কাছে কুমিল্লার বিভিন্ন শিল্পী, সাংবাদিক ও সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দকে তারা সমন্বয় করে কাজ করে যাচ্ছেন। আমরা শিল্পীরাও তাদের অনেক সচেতনতামূলক প্রচার অনুষ্ঠানে অংশ নিচ্ছি। ডিএনসি কুমিল্লার উপ-পরিচালকের এমন কর্মকান্ড সত্যিই প্রশংসার দাবী রাখে।
ঐতিহ্য কুমিল্লার সভাপতি সাংবাদিক ও গবেষক জাহাঙ্গীর আলম ইমরুল বলেন, কুমিল্লা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কার্যক্রম চোখে পড়ার মত। জেলার বিশাল সীমান্ত এলাকা দিয়ে মাদক প্রবেশ করে। তাই হয়তো মাদক একেবারে নির্মূল করা হয়তো সম্ভব নয় তবে নিয়ন্ত্রণে রাখতে কুমিল্লা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের প্রতিটি সদস্যই দিনরাত নিরলসভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছে। কুমিল্লায় মাদক কারবারিদের বিশাল সিন্ডিকেট রয়েছে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কঠোরতায় এ সিন্ডিকেট অনেকটায় দুর্বল হয়ে পড়েছে। তাদের রুখতে আপোসহীনভাবে নিয়মিত অভিযান অব্যাহত রাখতে হবে।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তর কুমিল্লার উপ-পরিচালক চৌধুরী ইমরুল হাসান বলেন, ভারতীয় সীমান্ত জেলা হিসেবে কুমিল্লায় মাদক কারবারীদের তৎপরতা অনেকটা বেশি। একটি বড় জেলায় আমরা আমাদের সীমিত জনবল দিয়ে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি। আমাদের অফিসের প্রতিটি সদস্য দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। আমাদের দাপ্তরিক কাজের পাশাপাশি মাদক বিরোধী সচেতনতায় নগর থেকে গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলে স্কুল কলেজ থেকে শুরু করে বিভিন্ন স্থানে জনসচেতনতামূলক অনুষ্ঠানের আয়োজন করছি।
তিনি বলেন, মাদক নিয়ন্ত্রনে আমাদের প্রতিজ্ঞা, আমাদের এমন দৃঢ় মনোবল ও নিয়মিত অভিযানের কারণে মাদক কারবারিদের নেটওয়ার্ক ভেঙ্গে পড়তে শুরু করেছে। আমরা বিগত সময়ে অনেক বড় রাজনৈতিক ব্যাক্তি পরিচয় দেওয়া মাদক ব্যবসায়ীদেরও গ্রেপ্তার করেছি। বর্তমানে জেলার বড় বড় মাদক ব্যবসায়ীরা আমাদের বিভিন্ন মাধ্যমে হুমকি দামকি দিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া এই দপ্তরে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে জনমনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরী করতে মাদক ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট গণমাধ্যমসহ বিভিন্ন দপ্তরে ভিত্তিহীন, মিথ্যা, বানোয়াট এবং ভুল তথ্য দিয়ে যাচ্ছেন। এটা অনাকাঙ্খিত। সরকারী সংস্থার ভাবমূর্তি এবং এতে কর্মরত কর্মচারীদের মনোবল যাতে নষ্ট না হয় এবং অধিদপ্তরের প্রতি জনমনে যেন আস্থার সংকট তৈরী না হয় সেজন্য সঠিক তথ্য প্রকাশ করা জরুরী বলে আমি মনে করি। তাদের এমন ঘৃণ্য চক্রান্তের তীব্র নিন্দা জানাই।
ছবিঃ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তরের বিভিন্ন কাযক্রম।