
অনলাইনে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে নারীদের ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ, ছবি এডিট করে অশ্লীল কনটেন্ট তৈরি, প্রকাশের হুমকি দিয়ে মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নেওয়া সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের মূল হোতা মো. আব্বাস (৩৮)–কে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১১।
শনিবার (২২ নভেম্বর) দুপুরে নগরীর শাকতলা র্যাব কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র্যাব-১১, সিপিসি-২, কুমিল্লার কোম্পানি কমান্ডার মেজর সাদমান ইবনে আলম।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, গত ৫ নভেম্বর কুমিল্লার দেবিদ্বার থানার এক ভুক্তভোগী নারী র্যাব-১১, সিপিসি-২ কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে জানান যে, অজ্ঞাত পরিচয়ের কয়েকজন প্রতারক তার টিকটক আইডিতে নক করে অনলাইনে চাকরির প্রলোভন দেখায়। ‘রেজিস্ট্রেশনের’ কথা বলে তারা তার ব্যক্তিগত তথ্য ও কিছু ছবি সংগ্রহ করে। পরবর্তীতে ওই ছবি এডিট করে নগ্ন ছবি ও ভিডিও তৈরি করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে বিকাশ, নগদ ও রকেটের মাধ্যমে মোট ৭ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়।
এরপরও প্রতারক চক্র অতিরিক্ত অর্থ দাবি করলে ভিকটিম অপারগতা প্রকাশ করেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে প্রতারকরা তার ফেসবুক আইডি হ্যাক করে প্রোফাইল পিকচারে অশ্লীল ছবি আপলোড করে এবং তার পরিবারের সদস্যদের মোবাইলে নগ্ন ছবি–ভিডিও পাঠিয়ে সামাজিকভাবে হেনস্তা করে।
অভিযোগ পাওয়ার পর র্যাব ছায়া তদন্ত শুরু করে এবং তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় প্রতারণায় জড়িত মূল হোতাকে শনাক্ত করে।
র্যাব জানায়,গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ২১ নভেম্বর রাতে র্যাব-১১, সিপিসি-২ এর একটি আভিযানিক দল ভোলা জেলার তজুমদ্দিন থানাধীন গোলকপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে চক্রের মূল হোতা মো. আব্বাসকে গ্রেফতার করে। এসময় তার কাছ থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত ২টি মোবাইল ফোন ও নগদ টাকা উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত আব্বাস ভোলা জেলার তজুমদ্দিন উপজেলার দক্ষিণ আড়ালিয়া এলাকার মৃত আবুল কালামের ছেলে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আব্বাস জানায়
১৫ অক্টোবর সন্ধ্যায় সে ভিকটিমের টিকটক আইডিতে নক করে অনলাইনে ‘ঘরে বসে প্রতিদিন ১,০০০ টাকা আয় করা যায়’—এমন প্রলোভন দেয়। রেজিস্ট্রেশনের কথা বলে ভিকটিমের ব্যক্তিগত ছবি সংগ্রহ করার পর একটি অ্যাপের লিংক পাঠায়। লিংকে প্রবেশ করার পর ভিকটিমের ফেসবুকসহ সব অ্যাকাউন্ট তাদের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়।
এরপর ভুক্তভোগীর ছবি এডিট করে পর্নোগ্রাফি তৈরি ও প্রকাশের ভয় দেখিয়ে বিভিন্ন সময়ে ৭ লাখ টাকা আদায় করে। তবুও টাকা না পেলে চক্রটি ভিকটিম এবং তার পরিবারের ব্যক্তিগত নম্বরে অশ্লীল কনটেন্ট পাঠায় এবং ফেসবুক প্রোফাইলে তা আপলোড করে।
র্যাব জানায়, আব্বাস একটি সংঘবদ্ধ অনলাইন প্রতারক চক্রের প্রধান। দীর্ঘদিন ধরে তাদের দল অনলাইনে চাকরির লোভ দেখিয়ে নারীদের তথ্য হাতিয়ে নেয়, আইডি হ্যাক করে অশ্লীল ভিডিও তৈরি করে, এরপর প্রকাশের ভয় দেখিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়।
র্যাব জানায়, গ্রেফতারকৃত আব্বাসকে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দেবিদ্বার থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে ।
ছবিঃ সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন র্যাব-১১, সিপিসি-২, কুমিল্লার কোম্পানি কমান্ডার মেজর সাদমান ইবনে আলম ও গ্রেপ্তারকৃত আব্বাস।




