কুমিল্লা —০৬ (আদর্শ সদর, সদর দক্ষিন, সিটি কর্পোরেশন ও সেনানিবাস এলাকা) ফ্যাসিস আওয়ামীলীগের সময়ের বিগত ১৭ বছর ধরে বিএনপির তৃণমূল নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা, হামলা, জেল, গুম এবং হত্যাকাণ্ডের জেরে সংগঠনের নেতাকর্মীরা প্রায় ছিন্নভিন্ন হয়ে পড়েছিলেন। এই দীর্ঘ সময়ের মধ্যে রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়ানো এবং তাদের অব্যাহত সহায়তার দায়িত্ব পালন করেছেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সাবেক এমপি হাজী আমিন উর রশিদ ইয়াছিন। যেসব পরিবারে একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি জেল খেটেছেন, সেখানে নিজ অর্থায়নে খাবার, চিকিৎসা এবং যাবতীয় প্রয়োজনীয় খরচ তিনি নিশ্চিত করেছেন।
কেবল সহায়তা প্রদানেই সীমাবদ্ধ না থেকে, হাজী ইয়াছিন সকল নেতাকর্মীর আইনী সহায়তার খরচ বহন করেছেন, আইনজীবী নিয়োগ থেকে শুরু করে মামলার যাবতীয় খরচ নিজের দায়িত্বে নিয়েছেন। আন্দোলনে নিহত নেতাকর্মীদের পরিবারের জন্য নিজ হাতে খরচ বহন এবং দাফন-কাজে সহায়তা করা তার মানবিক দৃষ্টান্তের অংশ। প্রতি ঈদে, নেতা-কর্মীদের পাশে দাঁড়িয়ে তাদেরকে স্বস্তি ও সহানুভূতির স্পর্শ দিয়েছেন তিনি। এক কথায়, দলের জন্য তার জীবন-অর্থ ত্যাগ এবং নেতাকর্মীদের প্রতি অঙ্গীকারই তাকে তৃণমূলের হৃদয়ের অতি প্রিয় নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
এই মানবিক ও সাংগঠনিক অবদানের ধারাবাহিকতা গত পাঁচ দিনে তৃণমূল নেতাকর্মীদের কর্মসূচিতে প্রতিফলিত হয়েছে।
গত বুধবার শহরের কান্দিরপাড় পূবালী চত্বরে বিএনপির তৃণমূল নেতাকর্মীরা অবস্থান গ্রহণ করে। পাঁচ দিনের ধারাবাহিক কর্মসূচির মূল আঙ্গিক ছিল এই অবস্থান, যেখানে ইয়াছিনের মনোনয়ন পুনর্বিবেচনার দাবিতে নেতাকর্মীরা নীরব, শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়েছেন।
অবস্থান কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারীরা জানান, “১৭ বছরের সংগ্রামের প্রতি সম্মান জানাতে এবং আমাদের নেতা ইয়াছিনের মানবিক অবদানকে স্বীকৃতি দিতে আমরা এখানে এসেছি।”
বৃহস্পতিবার নারীদের সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। স্থানীয় নারী নেতারা বলেন, “হাজী ইয়াছিন শুধু নেতা নন, মানবতার প্রতীক। যেসব পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেখানে তিনি কখনও পিছিয়ে যাননি। আমরা চাই আমাদের নেতা যেন এই আসনে বসে মানুষের জন্য আরও কিছু করতে পারেন।”
পরদিন দলের তরুণ ও বয়স্ক নেতাকর্মীরা নফল রোজা পালন করেন। সন্ধায় গণ–ইফতারে এলাকার অসংখ্য মানুষ অংশ নেন এবং এই কর্মসূচির মাধ্যমে ইয়াছিনের মানবিক অবদান ও দলীয় একতাকে তুলে ধরা হয়।
শুক্রবার মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। প্রধান আলোচনায় স্থানীয় ব্যবসায়ী ও সমাজসেবকরা বলেন, “আমরা চাই আমাদের নেতা শুধু রাজনৈতিক নয়, মানবিক দিক থেকে মানুষকে ছুঁয়ে দেখান। এই দোয়া মাহফিল সেই উপলক্ষ্য।”
শুক্রবার জুমার নামাজের পর কুমিল্লার বিভিন্ন মসজিদে—কান্দিরপাড় কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ, ঠাকুরপাড়া, চৌধুরীপাড়া, চকবাজারসহ মহানগরের প্রতিটি ওয়ার্ডে এবং সদর দক্ষিণ ও সদর উপজেলার ইউনিয়ন পর্যায়ের মসজিদে বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হয়। এই দোয়ায় এলাকার ব্যবসায়ী, পেশাজীবী, তরুণসমাজ, ধর্মপ্রাণ মুসল্লি এবং নেতাকর্মীরা অংশগ্রহণ করেন।
বিগত ১৭ বছর বিএনপির নির্যাতিত তৃণমূল নেতাকর্মী ও তার পরিবারের আয়োজনে আজ শনিবার (০৮ নভেম্বর) বিকাল নগরীর পূর্বালী চত্তরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন।
দলের সকল প্রোগ্রামের ব্যয় যেমন মিলাদ, দোয়া, ব্যানার, পোস্টার বা লিফলেট—সবই নিজ অর্থে বহন করেছেন। এমন অবদান আজও তৃণমূল নেতাকর্মীদের হৃদয়ে গভীরভাবে রক্তক্ষরণ করছে, বিশেষ করে যাদের পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি জেলে ছিলেন।
নেতাকর্মীদের মতে, ইয়াছিনের নেতৃত্বে এলাকার উন্নয়ন, শান্তি, সম্প্রীতি ও স্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিবেশ বজায় থাকবে। তারা বলেন,“আমরা চাই, আমাদের নেতা এমন একজন যিনি রাজনৈতিক ও মানবিক দিক থেকে উভয় দিকেই মানুষের কল্যাণে কাজ করতে পারেন। তাই আমরা তার মনোনয়ন চাই।”
হাজী ইয়াছিনের নেতৃত্বের আরেকটি বৈশিষ্ট্য হলো ধর্ম, নৈতিকতা ও রাজনৈতিক দায়বদ্ধতার সংমিশ্রণ। তরুণ সমাজের জন্য তিনি অনুপ্রেরণার উৎস। মহাজাগরতা তৈরি করতে গিয়ে গত পাঁচ দিনে ধারাবাহিক কর্মসূচির মাধ্যমে তৃণমূলের নেতৃত্ব সক্রিয় এবং ঐক্যবদ্ধভাবে সামনে এসেছে।
মহানগর যুবদলের আরেক নেতা মশিউর রহমান সজিব বলেন, হাজী ইয়াছিনের ৫ দিনের ধারাবাহিক কর্মসূচি শুধুই রাজনৈতিক নয়, এটি মানবিক উদারতার এক অনন্য প্রদর্শনী। তিনি নিজ অর্থ, শ্রম ও সময় দিয়ে তৃণমূল নেতাকর্মীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন, পরিবারগুলোর দুঃখ–দুর্দশা লাঘব করেছেন, এবং ধারাবাহিক কর্মসূচির মাধ্যমে দলের ঐক্য এবং জনমতকে শক্তিশালী করেছেন।
মানসুর নিজামী নামে মহানগর যুবদল নেতা বলেন, আজও তৃণমূল নেতাকর্মীদের আশা—যে নেতা জীবনের ত্যাগ, মানবিক অবদান এবং নেতৃত্বের যোগ্যতা দিয়ে প্রতিষ্ঠিত, তিনি সংসদে নির্বাচিত হয়ে মানুষের জন্য আরও বেশি কাজ করতে সক্ষম হবেন। এই আশা ও প্রার্থনা আমাদের আন্দোলনকে আরও শক্তিশালী করে তুলেছে।
মহানগর যুবদলের যুগ্ন আহবায়ক সাজ্জাদ হোসেন বলেন, “এমন নেতাকে পাশে পেয়ে আমরা আত্মবিশ্বাসী। যিনি নিজের অর্থ, সময় ও শ্রম দিয়ে নেতাকর্মীদের পাশে দাঁড়ান—এরকম একজন মানুষ আমাদের নেতা হওয়ার যোগ্য। আমাদের আশা, সে সংসদে গেলে মানুষের কল্যাণে আরও বেশি কাজ করতে পারবে।”
হাজী ইয়াছিন সবসময় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন—কোনও প্রচার ছাড়াই। তিনি নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের অর্থ ব্যয় করে জেলখরচ, চিকিৎসা, খাদ্যসহ নানা প্রয়োজনীয় খরচ বহন করেছেন। একজন নেতাকর্মীর ছেলে জেলে থাকাকালে তার পরিবারকে সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার অভিজ্ঞতা বলেন,“একটি পরিবারের চুলা জ্বলানোর টাকাটা নীরবে পৌঁছে দিতেন তিনি। আমরা জানতাম না কে পাঠিয়েছে—কিন্তু সে সময়ে আমাদের জন্য একজন দেবতার মতো হাজী ইয়াছিন ছিলেন।”
আমরা এ নেতার মনোনয়ন দেওয়ার জন্য রাজপথে বিক্ষোভ করেছি, রোজা রেখেছি, গণ–ইফতার করেছি। মসজিদে মসজিদে দোয়া পড়েছি।
এই মানবিক ও রাজনৈতিক গল্পটি প্রতিফলিত করে যে, সত্যিকার নেতৃত্ব শুধু পদ-পদবী বা অর্থে নয়, মানুষের পাশে দাঁড়ানো এবং তাদের ভালোবাসা অর্জনে প্রমাণিত হয়। হাজী ইয়াছিন সেই প্রমাণ, যার প্রতি তৃণমূলের বিশ্বাস ও স্নেহ এখনও অটুট।