সকালের কোমল রোদে ধীরে ধীরে ভিড় বাড়ছিল। ছোট শিশু থেকে শুরু করে বয়স্ক নারী–পুরুষ—সবাই হাতের টোকেনটি শক্ত করে ধরে অপেক্ষা করছেন চিকিৎসার জন্য। কুমিল্লা নগরীর ৩ নম্বর ওয়ার্ডের এন.আর. ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে শনিবার (৮ নভেম্বর) আয়োজন করা হয়েছিল দিনব্যাপী ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প, ডায়াবেটিস পরীক্ষা এবং রক্তের গ্রুপ নির্ণয় কর্মসূচি। মানবিক কুমিল্লার উদ্যোগে আয়োজিত এ ক্যাম্পে একদিনেই সেবা নেন সাত হাজারের বেশি মানুষ।
চিকিৎসা শেষে রোগীরা পেয়েছেন বিনামূল্যে প্রয়োজনীয় ওষুধও—যা নিম্ন ও মধ্য আয়ের পরিবারগুলোর জন্য ছিল বড় স্বস্তি।
চিকিৎসাসেবা পরিদর্শন করতে এসে মানবিক কুমিল্লার প্রতিষ্ঠাতা ও কুমিল্লা মহানগর বিএনপির সভাপতি উদবাতুল বারি আবু বলেন,“আজকাল চিকিৎসা অনেক পরিবারের নাগালের বাইরে। তাই নিম্ন আয়ের মানুষের পাশে দাঁড়াতে এবং মানবিক দায়িত্ববোধ থেকে আমরা ধারাবাহিকভাবে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প করছি। ইতোমধ্যে ১০টি ওয়ার্ডে এ ক্যাম্প হয়েছে। প্রতিটি ওয়ার্ডেই ফলোআপের ব্যবস্থা রাখছি।”
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন—মহানগর বিএনপির জলিস আবদুর রব, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা কৃষকদলের সভাপতি মোস্তফা জামান, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্য ডা. শাহিন, মহানগর মহিলা দলের সভাপতি রাহান রহমান হেলেন, মহানগর যুবদলের আহবায়ক ফয়সালুর রহমান পাভেল, দক্ষিণ জেলা মহিলা দলের সভাপতি সাকিনা বেগম, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ, কেন্দ্রীয় সহ–সাংগঠনিক সম্পাদক ভিপি আব্দুল্লাহ আল মামুন, আরাফাত রহমান কোকো সংসদ মহানগর সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান রানা, কাজী জামান, ৩ নম্বর ওয়ার্ড মহিলা দলের সভাপতি তাসরিন আক্তার পারুল প্রমুখ।
সার্বিক তত্ত্বাবধান করেন ৩ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবু বক্কর সিদ্দিক শিল্পী।
মেডিকেল সেবায় নেতৃত্ব দেন—ড্যাব কুমিল্লার সাবেক সভাপতি ডা. মিনহাজ তারেক, সাধারণ সম্পাদক ডা. সফিকুর রহমান, মহানগর বিপিএমপি সাধারণ সম্পাদক ডা. রাসেল আহমেদ চৌধুরী, অর্থোপেডিক্স সার্জন ডা. আফতাব উদ্দিন, ডা. প্রিয়ম চক্রবর্তী, ডা. মোস্তাফিজ জিতু, ডা. মুকিত এবং ডা. তুহিন।
চিকিৎসকরা শুধুমাত্র প্রেসক্রিপশনই দেননি—জীবনযাপন, খাদ্যাভ্যাস ও রোগ প্রতিরোধ বিষয়ে সচেতনতার দিকটিও গুরুত্ব দিয়েছেন।
২৭টি ওয়ার্ডেই মেডিকেল ক্যাম্পের পরিকল্পনাঃ মানবিক কুমিল্লা জানায়, ভবিষ্যতে কুমিল্লা মহানগরীর ২৭টি ওয়ার্ডেই এমন ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে। বিশেষ করে নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে তারা ফলোআপ চিকিৎসা সেবা চালুরও সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
অনেক রোগী জানিয়েছেন—নিজেদের পাড়ায়, হাতের নাগালে ও বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা পাওয়ায় তারা অত্যন্ত উপকৃত হয়েছেন। বিশেষ করে যাদের নিয়মিত চিকিৎসা বা ওষুধ কেনার সামর্থ্য নেই, তাদের জন্য এটি ছিল আশীর্বাদস্বরূপ।